Excellent and professional tourism services mainly for individual, group or corporate services. Arranges comfortable accommodation, quality food and transport available within the area. Recommended!
কাশ্মীর ভ্রমনঃ
যখন অনেকদিন অপেক্ষার পর একটা বহুল প্রতীক্ষিত ঘটনা জীবনে ঘটে তখন এর মহত্ত্ব নিয়ে বেশী কিছু বলার আছে বলে মনে হয় না । এরকমই একটা ঘটনা আমার জীবনে ঘটে গেল; সেটা হল কাশ্মীর ভ্রমণ। আমার মত এরকম লাফাঙ্গা ছেলের দ্বারা এরকম সুক্ষ প্ল্যান করে ট্যুর করা কোনভাবেই সম্ভব ছিলোনা। আমি একেতো লাফাঙ্গা তার উপর অগোছালো... আর কাশ্মীরের মত যায়গায় ভ্রমণ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই সুক্ষ পরিকল্পনা আর সুন্দর গোছগাছের মাধ্যমেই যেতে হবে, যা আমার দ্বারা এক রকম কল্পনাতীত ছিল। আমি বিভিন্ন যায়গায় ঘুরাঘুরি করি এবং সেটা একাএকা। শুধুমাত্র কাশ্মীর যাবো বলে একটা গ্রুপের খোজ করছিলাম যাদের সাথে গেলে অন্তত মানসিক ভাবে কোন পেইন পেতে না হয়। আর এই জন্যই আমি সিলেট থেকে ঘুরে আসার কিছুদিন পরেই আবারো সিলেট গেলাম কারন গ্রুপে গেলে কেমন লাগে তার ধারনা নিতে। এখানে অবশ্যই ধন্যবাদ দিবো মেঘলা কে, সেই আমাকে এই গ্রুপের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। যদিও ফাউল টা কাশ্মীর যায় নাই। তো সিলেট থেকে ঘুরে আসার পরই আমি নিশ্চিত হলাম যে, গ্রুপে ট্যুর দেওয়া সম্ভব এবং সেটা খুবই স্বস্থিকর।
আমার আরেকটা সমস্যা ছিল আমি সরকারী চাকুরী করি না ( আসলে সে যোগ্যতা নাই ), এবং বেসরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য এই ঘুরাঘুরিটা এক প্রকার অভিশাপই বলা চলে। যেখানে একদিন ছুটির জন্য ৭ দিন চেষ্টা করা লাগে সেখানে একটানা ৭ দিন ছুটির জন্য কি পরিমাণ চেষ্টা করতে হয়েছে সেটা তারা বুঝবেন যারা আমার মত বেসরকারী চাকুরী করেন। কিভাবে এই ছুটি পেয়েছিলাম সেটা বলতে গেলে আরেক ইতিহাস হবে। তো... ছুটি পেতে পারি এমন একটা আভাস পাওয়ার পরই টিটিজির কর্নধার সামির ভাই কে ফোন দিলাম যে ভাই আমি তো কাশ্মীর যেতে চাই। যদিও আগেও বলেছিলাম কিন্তু কনফার্ম করি নাই। কিন্তু যখন দেখলাম সামীর ভাই রীতিমত ইভেন্ট খুলে ফেইসবুক কাপাচ্ছে তখন আমিও কেঁপে গেলাম। প্রথমত সামীর ভাই বলেছিলেন যে সকল আসন বরাদ্দ হয়ে গেছে। কিন্ত পরে আবার তিনি তার সেই ট্রেডমার্ক ডায়ালগটা দিলেন “দেখি আপনার জন্য কি করা যায়”। এই ডায়ালগ শুনার পরই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছিলাম যে আমিও একটা আসন পাচ্ছি। কিছুক্ষন পরেই উনি জানালেন যে আমার জন্য একটা আসন ব্যবস্থা করছেন, যেটা আমি আগেই বুঝে গেছিলাম। কিন্তু কিছু উটকো শর্ত দিয়েছিলেন যে এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে, যদিও পরে ওসব শর্তের ছিটেফোটাও টের পাইনি (সামীর ভাই এখানে আপনার জন্য একটা ছোট ধন্যবাদ)। এই টের না পাওয়ার কারন ছিল এটা টিটিজির ট্যুর।
আসন পাওয়ার পর আরেক যুদ্ধ শুরু হল, অফিস থেকে ছুটি নেওয়া। অনেক ঝাক্কি-ঝামেলার পর যখন ছুটি পেলাম তখনই একবার মনে হয়েছিল; ‘আহা! আমি পাইলাম, ইহাকে পাইলাম’। ছুটি পাওয়ার পরপরই আবার সামীর ভাইকে ফোন দিলাম; ‘ভাই, আমার এখন কি করণীয়? উনি বললেন ‘বুকিং মানি টা দিয়ে দেন’ (ব্যবসায়ী মানুষ) । টাকা-পয়সার পর্ব শেষ হওয়ার পর শুধু একটা কাজই করেছি প্রতিদিন, সেটা হল ‘অপেক্ষা’। এই অপেক্ষার মধ্যেই আমরা যারা কাশ্মীর যাবো বলে প্ল্যান করেছিলাম তারা নিয়মিত আড্ডা দিতাম ফেইসবুক মেসেঞ্জারের গ্রুপে। বলতে গেলে আমাদের আনন্দ শুরু হয়ে গিয়েছিল তখন থেকেই। গ্রুপে ছোট-বড় সবাই এত তাড়াতাড়ি আপন হয়ে গেছিলাম যে, যার সাথে কখনই দেখা হয়নি তাদের সাথে সাবলীল হাসি-তামাশা করেছি (যদিও উনারা কি ভেবেছেন জানিনা)। কিছু মেম্বার তো কোন সাড়া-শব্দ দিতনা , আমরা কি করি এসব দেখতো আর মুচকি-মুচকি হাসত।এসব একদিন-দুদিন করতে করতে অবশেষে সবার কাঙ্ক্ষিত দিন আসলো। যাওয়ার সময় আমাদের ফ্লাইট ছিল ৪ জনের; আমি, ইস্কান্দার তারেক ভাই, মাহাবুব ভাই এবং রেবেকা আপু। এরাই ছিল আমার প্রথম ট্যুরমেট যাদের সাথে ২ মিনিট কথা বলেই সিউর হয়ে গেছিলাম যে আমি একটা পরিবারের সাথেই যাচ্ছি। যদিও গ্রুপে মোট ২৮ জন ছিলাম কিন্তু ফ্লাইট শিডিউলের কারনে কলকাতায় গিয়ে সবার সাথে দেখা হয়েছিল।
কলকাতা থেকে আমরা বিভিন্ন ফ্লাইটে শ্রীনগর গিয়েছি; মূলত সেখানেই আমাদের ২৮ জনের একসাথে হওয়া। সেখানে পৌছানোর পর আরেক ফেরেস্তার সঙ্গ পেলাম যিনি হলেন জাওয়েদ ভাই। শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর থেকেই মনে হচ্ছিল যে; নাহ, এখানে না আসলে মনে হয় খুব বড় একটা মিস হয়ে যেত।
আমাদের প্রথম স্পট ছিল আরু ভ্যালী; এখন পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়ে ভাল যায়গা। আরু ভ্যালীর যাত্রা পথের রাস্তা, কনকনে ঠান্ডা, হোটেলের চারপাশের বরফ, রাতের খাবার, রাত্রিযাপন, ইলেক্ট্রিক ব্লাংকেট, সকাল বেলার আরু ভ্যালী, সকাল বেলায় একজন এন্জেল এর সাথে দেখা, সবাই মিলে শাল কেনাকাটা করা... সবই মনে হচ্ছে স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে এখন। ভবিষ্যতে কখনো সুযোগ হলে আবার আরু ভ্যালী যাবো এবং নিশ্চিত ভাবেই এই টিটিজিকেই অনুরোধ করবো আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আরু ভ্যালী থেকে বের হয়ে আমরা গিয়েছি বাইসারান যা মিনি সুইজারল্যান্ড নামে পরিচিত। এটা আরেক জান্নাত। জীবনে হয়তো ভাল কিছু করেছিলাম বলেই হয়ত এমন একটা যায়গায় পা দিতে পেরেছি। এই বাইসারান যাওয়া এবং আসা করেছি ঘোড়ার পিঠের চড়ে যা পনি রাইড নামে পরিচিত। ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠার অভিজ্ঞতা আসলে বলে বোঝানো মুশকিল। যদিও অনেকেই যাওয়া-আসা করতে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছেন, কিন্তু আমার এক চুল পরিমাণ কোন অসুবিধা হয়নি। এখানে একটা কথা বলতেই হয় আমাদের সামির ভাইয়ের কথা; আমাদের ঘোড়া চালকরা অতিলোভের আশায় শর্টকার্ট রাস্তা ব্যাবহার করেছিল যা খুব ভয়ঙ্কর ছিল এবং এজন্য আমাদের টিমের অনেকেই ভয় পেয়েছিল। আমাদের টিমের সদস্যদের এই সমস্যার কারনে সামীর ভাই যে রি-একশন টা দেখিয়েছিলেন তা একান্ত নিজের কাছের লোক ছাড়া অন্য কারো জন্য দেওয়া সম্ভব না। আমি তখনই বুঝে গেছিলাম; এই লোক কতটা সচেতন আমাদের জন্য।
তারপর একে একে শ্রীনগর সিটি ট্যুর, সোনামার্গ, গুলমার্গ ঘুরেছি। সিটি ট্যুরের মধ্যে যেসব যায়গা ছিল সেগুলোর সৌন্দর্য আসলে লিখে বা বলে বোঝানো যাবেনা। সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, বাদাম গার্ডেন, দর্গা, পারিমহল... কোনটাই কম না। এসব যায়গায় গিয়ে একটা কথাই বারবার মনে হয়েছে; ইশ! যদি থেকে যেতে পারতাম। আরেকটা জান্নাত ছিলো কাশ্মীরের বিখ্যাত টিউলিপ গার্ডেন। এখানে গেলে আপনি নিশ্চিত কিছুক্ষনের জন্য মূর্ছা যাবেন। আপনি স্বাভাবিক হওয়ার পরই বুঝতে পারবেন যে কতটা অপার সৌন্দর্যের মধ্যে আছেন।
সোনামার্গে যাওয়ার পর ভাবছিলাম এ আবার কি যায়গা?! কিন্তু ভিতরে যাওয়ার পর বুঝলাম; হ্যা!! এটাই যায়গা, এটাই জান্নাত। অনেক উপরে উঠেছিলাম। অনেক মাস্তি হয়েছে, অনেক ছবি তুলেছি এখানে। জীবন তোলপাড় করা কিছু সময় কেটেছে এখানে। পরের দিন আমদের যাত্রা ছিল গুলমার্গ; বরফে ঢাকা একটা স্বর্গ। আইস বাইকের সেই রোমাঞ্চকর ৩০-৪০ টা মিনিট জীবনের অন্যতম একটা অধ্যায় হয়ে থাকবে।
এতক্ষন বললাম কাশ্মীরের কথা। এবার বলি এই মহা আয়োজনের পিছনের মানুষ গুলোর কথা। সামীর ভাই, জাওয়েদ ভাই, বুলবুল ভাই... তিনজন মানুষ যে কি পরিমাণ পরিশ্রম করেছেন আমাদের জন্য তা বললে উনাদের অসম্মান করা হবে। ভাই...আপনারা মানুষরূপী ফেরেস্তা, আমাদেরকে সবসময়ের জন্য সাপোর্ট দিয়ে গেছেন। আমি আপনাদের কাছে চির-কৃতজ্ঞ। যখন যেভাবে দরকার তখন সেভাবেই ট্রীট করেছেন, সবার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা মাথায় রেখে কথা বলে যেভাবে সব কিছু সামাল দিয়েছেন; এক কথায় অসাধারন ভাই। ইউ আর অসা্ম, ইউ আর দ্যা বেস্ট।
এবার আসি আমাদের গ্রুপের সদস্যদের ব্যাপারে। মাশাআল্লাহ এই গ্রুপের ২৮ জন সদস্যই ছিল একেকটা ভাল মানুষের উদাহরণ। একটা পরিবারে যেমন পিচ্চি-পাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক, অভিভাবক থাকেন তেমনি আমাদের এই গ্রুপে সবই ছিল। নেলী আপুর ছেলে আর ইউনিলিভার তারেক ভাইয়ের ছেলে তো সবসময় সবাইকে মাতিয়ে রেখেছিলো। সবাই সবার যায়গাতে ছিলেন অনবদ্য। আমার নিজ পরিবারের পরে আরেকটা পরিবার পেয়েছি এই কাশ্মীর ট্যুরের মাধ্যমে। সারাজীবন মনে থাকবে সবাইকে।
যারা ট্যুরে খরচের ব্যাপারে একটু খচখচ করেন তাদের জন্য বলছি, ২ টাকা বাচানোর ১০০ টাকার কষ্ট করার কোন মানেই হয়না। মান সম্মত কিছু পেতে হলে একটু খরচ তো করতেই হবে। আর টিটিজির ব্যাপারে এটা ১০০% নিশ্চিত থাকতে পারেন, এরা ব্যবসা করেনা, এরা সার্ভিস দেয়।
পরিশেষে একটাই কথা; ভালো হোক টিটিজি, সামনে যাক অনেক দুর, উতরে যাক সকল কিছুই। টিটিজি একটা ভালবাসা Best Wishes For TTG!!
The beauty from Thansi to Nafakum can't express in word, can't capture by camera.... if u want to see it, feel it u have to go there.... thanks and all the best TTG
You can believe them. That's it.
Fantastic group of people. I enjoyed a lot. Want to go new places with this group and i wish for them good luck.